Fatwa No : 34
তালাকের ব্যাপারে চিন্তা করা বা মনের মধ্যে এ ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়ার দ্বারা কী শরিয়তের দৃষ্টিতে তালাক পতিত হয়ে যায়?

তালাকের ব্যাপারে চিন্তা করা বা মনের মধ্যে এ ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়ার দ্বারা কী শরিয়তের দৃষ্টিতে তালাক পতিত হয়ে যায়?

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু! বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। হুজুর! তালাকের বিষয়ে কিছু জানতে চাচ্ছি। আশা করি আমার পশ্নের উত্তর তাড়াতাড়ি দেবেন।
(১) আমি কোনদিন আমার স্ত্রীকে তালাক প্রদান করেছি কিনা আমি ঠিক নিশ্চিত হতে পারছি না। নিশ্চিত না হলে কি তালাক হয়?
(২) মাঝে মাঝে সন্দেহ হয় যে আমি কি উচ্চারণ করে তালাক দিলাম নাকি মনে মনে তালাক দিলাম এই রকম সন্দেহ দ্বারা কি তালাক হয়?
(৩) হুজুর আমি কোনো দিন আমার স্ত্রীর উপস্থিতিতে হোক বা তার অনুপস্থিতিতে হোক কোনো রকম তালাক যদি দিয়ে থাকি যা আমি মনে করতে পারছিনা বা ভুলে গেছি এবং এমন অবস্থায় তার সাথে সংসার করে যদি মারা যায় তাহলে আমরা স্বামী-স্ত্রী কি কাল হাশরের ময়দানে জেনাকারী হয়ে উপস্থিত হব? মনে করতে না পারা বা ভুলে যাওয়াকে কি আল্লাহ্ তায়ালা মাফ করে দেবেন? নাকি এর জন্য আমাদেরকে পাকড়াও করবেন?
(৪) শুধু সন্দেহ করে স্ত্রী থেকে আলাদা হওয়া উচিত হবে?
আমার চারটি পশ্নের উত্তর আলাদা আলাদা পয়েন্ট করে দেবেন প্লিজ। আর হুজুর আরও একটি বিষয় জানতে চাচ্ছি যেটা আমি পাঁচ নাম্বার পয়েন্ট করে দিচ্ছি
(৫) হুজুর চার নাম্বার প্রশ্ন করেছি যে শুধু সন্দেহ করে স্ত্রীর সঙ্গে আলাদা হওয়া উচিত হবে? যদিও আমি এখনও পুরোপুরি আলাদা হওয়ার পরিকল্পনা করিনি। কিন্তু আপনাদের কাছে এমন করে লেখার কারণে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে? আমার স্ত্রী এসকল বিষয়ে কিছুই জানেনা। দয়া করে জানাবেন প্লিজ। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহু!

الجوابُ حامِدا ًو مُصلیِّا ً وَمُسَلِّمًا

তালাক পতিত হওয়ার জন্য তালাকের শব্দ উচ্চারণ করা অথবা যা এর স্থলাভিষিক্ত হয়, যেমন লেখা বা তালাকদাতা বোবা হলে সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায় এমন ইশারা করা জরুরি। শুধুমাত্র তালাকের চিন্তা করা বা মনের মধ্যে এ ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়ার দ্বারা শরিয়তের দৃষ্টিতে কোন তালাক পতিত হয়না। সুতরাং সত্যিই যদি প্রশ্নকারী উল্লেখিত কোন এক পদ্ধতিতে তালাক না দিয়ে থাকে তাহলে প্রশ্নোল্লিখিত কোন সূরতেই প্রশ্নকারীর স্ত্রীর উপর কোন তালাক পতিত হয়নি। বরং তাদের বিবাহ অটুট রয়েছে। অতএব শুধু সন্দেহের কারণে স্ত্রীর থেকে আলাদা হওয়া উচিত হবেনা। আর কারো থেকে মাসআলা জিজ্ঞেস করার কারণে যেহেতু কোন তালাক পতিত হয়না। তাই মাসআলা জিজ্ঞেস করার কারণে প্রশ্নকারী ও তার স্ত্রীর সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়েনি।
অবশ্য প্রশ্নকারীর জন্য উচিত হচ্ছে তালাকের ব্যাপারে এমন চিন্তা ও ধারণা সৃষ্টি হলে নিজেকে অন্য কোন কাজে ব্যস্ত রাখা। যাতে এই ধরনের কু-চিন্তা বা ওয়াসওয়াসা থেকে মুক্ত থাকা যায়। পাশাপাশি, এমন সময়ে "لا حول ولا قوة إلا بالله" (লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ) বেশি বেশি পড়া উপকারী হবে।

مأخَذُ الفَتوی

كما في صحيح البخاري: عن أبي هريرة رضي الله عنه قال: قال النبي صلى الله عليه وسلم: «إن الله تجاوز لي عن أمتي ‌ما ‌وسوست ‌به ‌صدورها، ما لم تعمل أو تكلم.(‌‌باب الخطإ والنسيان في العتاقة والطلاق ونحوه، ج 3، ص 145، رقم : 2528، ط: السلطانية، مصر)-
وفي رد المحتار تحت (قوله وركنه لفظ مخصوص) هو ما جعل دلالة على معنى الطلاق من صريح أو كناية فخرج الفسوخ على ما مر، وأراد اللفظ ولو حكما ليدخل الكتابة المستبينة وإشارة الأخرس والإشارة إلى العدد بالأصابع في قوله أنت طالق هكذا كما سيأتي. وبه ظهر أن من تشاجر مع زوجته فأعطاها ثلاثة ‌أحجار ‌ينوي ‌الطلاق ولم يذكر لفظا لا صريحا ولا كناية لا يقع عليه كما أفتى به الخير الرملي وغيره ( كتاب الطلاق، ج3، ص 230، ط: سعيد)-
وفي حاشية الطحطاوي على مراقي الفلاح : السماع شرط فيما يتعلق بالنطق باللسان (إلى قوله) حتى لو ‌أجرى ‌الطلاق ‌على قلبه وحرك لسانه من غير تلفظ يسمع لا يقع وإن صحح الحروف (باب شروط الصلاة وأركانها، ص 219، ط: دار الكتب العلمية، بيروت)-وفي فتح القدير : لو ‌كرر ‌مسائل ‌الطلاق بحضرة زوجته ويقول: أنت طالق ولا ينوي طلاقا لا تطلق، وفي متعلم يكتب ناقلا من كتاب رجل قال: ثم وقف وكتب امرأتي طالق وكلما كتب قرن الكتابة بالتلفظ بقصد الحكاية لا يقع عليه.(باب إيقاع الطلاق، ج 4، ص 4، ط: دار الفكر، بيروت)-
وفي فتاوى يسئلونك: لأن الطلاق لا يكون إلا باللفظ أو ‌الكتابة ‌أو ‌الإشارة ‌المفهمة من أخرس ونحوه (ج9، ص 192، ط: مكتبة دنديس، فلسطين)-